একঝলকে দেখে নিন সরকারি গাণিতিক কমিটির গঠন, কার্যাবলী ও গুরুত্ব

Ajit Rajbanshi
0


composition-and-functions-of-public-accounts-committee


সরকারি গাণিতিক কমিটির গঠন, কার্যাবলী ও গুরুত্ব

North Bengal University'র সঙ্গে যুক্ত কলেজগুলির মধ্যে যারা যেকোনো একটি কলেজে পড়ো এবং যারা বতর্মানে Political Science Major এর ছাত্র-ছাত্রী, তাদের জন্য আজকের এই ব্লগপোস্ট। NBU- 2nd Semester SEC Political Science Syllabus- এ তোমাদের Public Accounts Committee (সরকারি গাণিতিক কমিটি) সম্পর্কে পড়তে হবে। SEC Political Science' 2nd Sem-এর স্টুডেন্টদের সুবিধার্থেই আজ সরকারি গাণিতিক কমিটির গঠন, কার্যাবলী ও গুরুত্ব (Composition, Functions & Importance Of Public Accounts Committee) সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।।


সরকারি গাণিতিক কমিটি || Public Accounts Committee 

যেহেতু জনগণের টাকাতেই একটা দেশ বা সরকার চলে সেই কারণে জনগণের টাকা সরকার নিজের খেয়াল খুশির মতো যেখানে সেখানে খরচ করতে পারে না। আর খরচ করলেও সেটা কেন করা হলো, কিভাবে করা হলো, কতটা করা হলো এই বিষয়গুলোর একটা হিসাব সরকারকে জনগণের সামনে তুলে ধরতে হয়। এবার সরকারের এই আয়-ব্যয়ের হিসাব রাখা বা সরকারের খরচের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য পার্লামেন্টে যে তিন ধরনের স্ট্যান্ডিং কমিটি রয়েছে, তারমধ্যে একটা অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থায়ী কমিটি হলো সরকারি গাণিতিক কমিটি।



সরকারি গাণিতিক কমিটির গঠন || Composition Of Public Accounts Committee

১৯১৯ সালের মটেগু চেমসফোর্ড আইন বা ভারত শাসন আইনে পাবলিক অ্যাকাউন্ট কমিটি বা সরকারি গাণিতিক কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছিল। সেই আইনের নিয়ম মেনে ১৯২১ সালের সর্বপ্রথম সরকারি গাণিতিক কমিটির গঠন করা হয়। তখন এই কমিটির সদস্য সংখ্যা হয়েছিল ১৫ জন কিন্তু বর্তমানে সরকারি গাণিতিক কমিটির সদস্য সংখ্যা ২২ জন।

▪ একজন সদস্যদের মধ্যে থেকে ১৫ জন নির্বাচিত হন লোকসভা থাকে এবং বাকি সাতজন সহযোগী কর্মকর্তা হিসেবে রাজ্যসভা থেকে নির্বাচিত হয়ে আসেন২২ জন সদস্যদের মধ্যে থেকে লোকসভার স্পিকার একজনকে এই কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ করেন।

▪ ১৯৬৬ থেকে ৬৭ খ্রিস্টাব্দের আগে পর্যন্ত নিয়ম ছিল লোকসভার স্পিকার কমিটির সদস্যদের মধ্যে যে শাসকদরের সদস্য,,তাকেই কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত করবেন। কিন্তু ১৯৬৭'র পর থেকে লোকসভার স্পিকার বিরোধী দলের সদস্যদের মধ্যে থেকে একজনকে এই কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ করেন।।

▪ সরকারি গাণিতিক কমিটির সদস্যদের কার্যকালের মেয়াদ হয় এক বছর। কার্যকালের মেয়াদ শেষ হলে কমিটি পূর্নগঠন করা হয়। অর্থাৎ কমিটির বর্তমান সদস্যদের বদলে পরবর্তী বছর নতুন সদস্যদের নিয়োগের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করা হয়।।

কোনো মন্ত্রী কি সরকারি গাণিতিক কমিটির সদস্য হতে পারেন?

▪ না পারেন না। যেহুতু এই কমিটির কাজ হলো সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক বা দপ্তরের আয়-ব্যয়ের হিসাব খতিয়ে দেখা, সরকারি টাকা খরচে কোনো মন্ত্রীর দ্বারা কোনো দপ্তর বা মন্ত্রকে কোনো দুর্নীতি হয়েছে কিনা- তা যাচাই করা, সেই কারণে কোনো মন্ত্রী সরকারি গাণিতিক কমিটির সদস্য হতে পারেন না।


সরকারি গাণিতিক কমিটির কার্যাবলী || Functions Of Public Accounts Committee

সরকারি গাণিতিক কমিটি মূখ্য কাজ হল জনগণের টাকা সরকার নিজের ইচ্ছা মত বা খেয়ালখুশী মতো যেখানে সেখানে উড়িয়ে দিচ্ছে কিনা,,সেটা দেখা বা নিয়ন্ত্রণ করা। 

▪ প্রথমত : সরকারি গাণিতিক কমিটি সংসদ বা পার্লামেন্ট কর্তৃক যে পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের যে দাবি স্বীকৃত হয়েছিল, সরকারি অর্থ সেই ভাবেই খরচ হয়েছে কিনা য়া দেখার জন্য বিভিন্নভাবে কাজ করে থাকে এই কমিটি। যেমন- সরকারি গাণিতিক কমিটির প্রধান কাজ হল প্রতিবছর CAG সরকারি খরচের যে হিসাবের রিপোর্ট রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করে এবং রাষ্ট্রপতি যেটা পার্লামেন্টে পেশ করে, ক্যাগের সেই রিপোর্ট ভালো করে পরীক্ষা, পর্যবেক্ষণ করে সরকারি গাণিতিক কমিটি। বলতে গেলে সরকারি অর্থ কোথায়,কতটা কেন কিভাবে খরচ হলো তাই দেখে PAC.

▪ দ্বিতীয়ত : বাজেটের মধ্য দিয়ে লোকসভা সরকারের খরচের জন্য যে পরিমান অর্থ ব্যয়ের দাবি মঞ্জুর করেছে,সেই অর্থের বাইরে গিয়েও এটি নির্দিষ্ট আর্থিক বছরে সরকার কোনো খরচ করেছে কিনা- তা দেখে সরকারি গাণিতিক কমিটি।

▪ তৃতীয়ত ; বাজেটে সরকারের কোনো মন্ত্রক বা দপ্তরের জন্য যে পরিমাণ অর্থ মঞ্জুর করা হয়েছিল, সেই পরিমাণ অর্থের অতিরিক্ত কোনো অর্থ খরচ হয়েছে কিনা, সঠিকভাবে খরচ হয়েছে কিনা, সঠিক কর্তৃপক্ষের দ্বারা হয়েছে কিনা তাও দেখে এই কমিটি। 

▪ চতুর্থ : এছাড়াও রাজ্য কর্পোরেশন গুলির আয় ব্যয়ের হিসাব, বাণিজ্য এবং উৎপাদনকারী ছক ও প্রকল্পের লাভ ক্ষতির হিসাব পরীক্ষা করেও তার ওপর রিপোর্ট তৈরি করে এই কমেটি।

▪ পঞ্চম ; সরকারের কোনাে বিভাগ ধার্য অর্থের অপচয় ঘটাচ্ছে কী না তা দেখাও এই কমিটির অন্যতম কাজ বলে বিবেচিত হয়।

▪ এছাড়াও আধা-শাসিত বা স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলির আয় ব্যয়ের হিসাব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এই সরকারি গাণিতিক কমিটি।


◆ সরকারি গাণিতিক কমিটির গুরুত্ব ;

PAC-এর গুরুত্ব এটাই যে-সরকারি গাণিতিক কমিটিতে শাসক দল ছাড়াও বিরোধী দলের সদস্যরা থাকায় এই কমিটির কাজে কোনো দুর্নীতি থাকার ভয় থাকে না। কমিটির চেয়ারম্যান করা হয় বিরোধী দলের সদস্যদের মধ্যে থেকে। তাই, সরকারি অর্থ আদতেও সঠিকভাবে খরচ হয়েছে কিনা, কোথায়, কত টাকা,কিভাবে,কেন খরচ হয়েছে, সরকার খেয়াল খুশি মতো যেখানে সেখানে জনগণের টাকা উড়িয়ে বেড়াচ্ছে কিনা, সরকারের কাজে দুর্নীতি হয়েছে কিনা, হলেও কোথায়, কতটা হয়েছে- এই বিষয়গুলো খুব সহজেই জনগণের সামনে তুলে ধরতে পারে সরকারি গাণিতিক কমিটি। ফলে বলা চলে সরকারের শেয়ার করছি মতো ব্যয় বা দুর্নীতির উপর চরম নিয়ন্ত্রণ রাখার মাধ্যম হিসেবে কাজ করে সরকারি গাণিতিক কমিটি।


*** এটা পড়ে দেখুন ; কেন্দ্রীয় মন্ত্রীপরিষদের গঠন ও কার্যাবলী সম্পর্কে সেরা নোট

*** এটাও পড়তে পারেন 👉 ; আনুমানিক ব্যয় হিসাব কমিটির গঠন ও কার্যাবলী

এটাও পড়তে হবে : বাজেট প্রণয়ন এবং বাজেট পাসের পদ্ধতি সম্পর্কে সুন্দর একটা নোট

** আরও পড়ে দেখুন ; লোকসভার স্পিকারের উপর A1 নোট

** এটাও পড়ে দেখুন👉 ; সরকারি গাণিতিক কমিটির A2Z

** NBU- Political Science 2nd Semester- Major & SEC Paper'এর সম্পূর্ণ সিলেবাসের ডিজিটাল পিডিএফ নোট খুবই কম দামে নিতে চাইলে আজই যোগাযোগ করো। 

** যোগাযোগ ; +918388986727 (WP / CALL)


▪ যুক্ত হন আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে👇 
▪ সরাসরি ইমেইল করতে 👉 rajajit6666@gmail.com 
 ▪ ফেসবুকে আমাদের সাথে কথা বলতে পেজ থেকে ম্যাসেজ করুন👇 Facebook Page 
Also You Can Follow Our 

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)