পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে রাজা রামমোহন রায়ের ভূমিকা বা অবদান সম্পর্কে আলোচনা
ভূমিকা ; পাশ্চাত্য বিস্তারের ক্ষেত্রে রাজা রামমোহনের কী ভূমিকা বা অবদান ছিল এটা জানার আগে আমাদের ভারতের পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের ব্যাপারটা ঠিক কী করে শুরু হলো এটা একটু জেনে নেওয়া প্রয়োজন। ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দ্বিতীয় চার্টার র্যাক্ট বা সনদ আইন পাশ হয়। এই সনদ আইনের একটা গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ছিল এই আইনে বলা হয় যে এবার থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রতি বছর ভারতীয়দের শিক্ষার ক্ষেত্রে এক লক্ষ টাকা করে ব্যয় করবে। কিন্তু সেই এক লক্ষ টাকা ভারতীয়দের কোন ধরনের শিক্ষার (প্রাচ্যধাচের শিক্ষায় নাকি পাশ্চাত্য শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যয় করা হবে প্রাপ্তদাসের শিক্ষায় নাকি পাশ্চাত্য ধাচের শিক্ষায়) এই প্রশ্নকে কেন্দ্র করে তখন থেকে একটা দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যায়। সেই কারণে ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের দিকে ব্রিটিশ সরকা পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। সেই কারণেই মূলত এই সময় বেসরকারি উদ্যোগেই পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে ব্যাপারটা শুরু হয়েছিল। যে সমস্ত ব্যক্তিরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন বা অবদান রেখে গিয়েছিলেন- তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন রাজা রামমোহন রায়।
ভারতে আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে রাজা রামমোহন রায়ের অবদান
পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে রাজা রামমোহন রায়ের যে অবদান বা ভূমিকা ছিল তা আমরা নিম্নলিখিত হবে তুলে ধরতে পারি যেমন।
▪ প্রথমত : অ্যাংলো হিন্দু স্কুল প্রতিষ্ঠা ; পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে রাজা রামমোহন রায় যেটা করেছিলেন সেটা হল ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি নিজের টাকা খরচ করে কলকাতায় অ্যাংলো হিন্দু স্কুল নামক একটি ইংরেজি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন; যেখানে বহু ছাত্র-ছাত্রী আধুনিক ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষা লাভের সুযোগ পেয়েছিল।
▪ দ্বিতীয়ত- হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠায় সহায়তা ; ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয়দের শিক্ষার উন্নতির জন্য ডেভিড হেয়ার, আলেকজান্ডার ডাফ, স্যার এডওয়ার্ড, বৈদ্যনাথ মুখোপাধ্যায়, রসময় দত্ত যখন হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠার কথা ভাবেন তখন সেই সময় হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও রাজা রামমোহন রায় তাদের বিশেষভাবে সহায়তা করেছিলেন। সেই সঙ্গে রাজা রামমোহন রায়ের স্কুল বুক সোসাইটির প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও ডেভিড হেয়ারকে সাহায্য করেছিলেন।
** মাধ্যমিক ইতিহাস সকল অধ্যায়ের MCQ, SAQ, 2, 4 & 8 মার্কের প্রশ্ন উওরের পিডিএফ নোট নেওয়ার জন্য আজই যোগাযোগ করো : +918388986727 নম্বরে
▪ তৃতীয়ত ; লর্ড আমহার্স্টকে চিঠি ও সরকারি সাহায্যের আবেদন ; ১৮২৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ভারতের তৎকালীন বড়লাট লর্ড আমহার্স্টকে একটি চিঠি লেখেন এবং সেই চিঠির মাধ্যমে তিনি লর্ড আমহার্স্টের কাছে দাবি জানিয়েছিলেন যে ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় শিক্ষার ক্ষেত্রে যে এক লক্ষ টাকা ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে; সেই টাকাটা যেন ভারতীয় ছাত্রদের প্রাকৃতিক বিজ্ঞান,গণিত,রসায়ন? দর্শন এবং শরীর বিদ্যাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য খরচ করা হয়।।
▪ চতুর্থ ; বেদান্ত কলেজ প্রতিষ্ঠা ; ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দের পর আবারো ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে রাজা রামমোহন রায় ভারতীয় শিক্ষার্থীদের মন থেকে অন্ধবিশ্বাস; কুসংস্কার ইত্যাদি দূর করে তাদের কুসংস্কার মুক্ত করে তোলার জন্য ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে আবার 'বেদান্ত কলেজ' প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
এসব ছাড়াও রাজা রামমোহন রায় নারী শিক্ষার ক্ষেত্রেও তিনি পাশ্চাত্য শিক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে ১৮২২ খ্রিস্টাব্দে তিনি 'স্ত্রীশিক্ষা বিধায়ক' নামে একটি পুস্তিকা রচনা এবং প্রকাশ করেছিলেন। এরপর কলকাতা মেডিকেল কলেজের হিন্দু ছাত্ররা যখন শব-ব্যবচ্ছেদ করেছিলেন তখন সে ক্ষেত্রেও তিনি সমর্থন জানিয়েছিলেন।
** মাধ্যমিক ইতিহাস সকল অধ্যায়ের MCQ, SAQ, 2, 4 & 8 মার্কের প্রশ্ন উওরের পিডিএফ নোট নেওয়ার জন্য আজই যোগাযোগ করো : 8388986727 নম্বরে
এটা দেখো👉 : মাধ্যমিক ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ 50+ MCQ প্রশ্ন উওর
** ক্লিক করো👉 : নব্যবঙ্গ গোষ্ঠীর সম্পূর্ণ ইতিহাস
এটাও দেখো👉 : ২০২০ ইতিহাস প্রশ্নপত্রের সমাধান** ক্লিক করো 👉 : ২০১৭ মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্নপত্র
*** এটাও পড়ে দেখো👉 : ২০১৭ মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্নপত্রের সমাধান