ভারতের প্রধানমন্ত্রীর যোগ্যতা, নিয়োগ, ক্ষমতা, কার্যাবলী এবং পদমর্যাদা
ভারতের কেন্দ্রীয় শাসন বিভাগের অংশ হলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী আবার যোগ্যতা কী? ভারতের প্রধানমন্ত্রী কীকরে কত বছরের জন্য কিভাবে নির্বাচিত হন? ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী এবং তার পদমর্যাদা কী- এই সকল বিষয়-ই আজকের এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।।
▪ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা-
ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে গেলে বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। নিম্নলিখিত কিছু শর্ত-ই হলো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা। যেমন-
▪ অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হবে।
▪ যিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হবেন তাকে অন্ততপক্ষে ২৫ বছর বয়স্ক হতে হবে।
▪ আইনসভার সদস্য হওয়ার যোগ্যতা থাকতে হবে।
▪ আইনসভার সদস্য নয় এমন কোনো ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী পদে নিযুক্ত হলে ছয় মাসের মধ্যে থাকে পার্লামেন্টের সদস্য হতে হয়।
তবে, দেউলিয়া এবং বিকৃত মস্তিষ্ক এমন ব্যক্তি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
▪ ভারতের প্রধানমন্ত্রী কিভাবে নির্বাচিত হন?
▪ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ,কার্যকাল এবং বেতন ▪
▪ সংবিধানের ৭৫(১) নং ধারা অনুযায়ী ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ করেন রাষ্ট্রপতি।
▪ প্রধানমন্ত্রীকে শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি।
▪ লোকসভায় যেই দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সেই দলের নেতা বা নেত্রীকেই রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেন।
▪ প্রধানমন্ত্রীর কার্যকালের মেয়াদ পাঁচ বছর।
▪ বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর বেতন প্রতি মাসে ৫০,০০০ টাকা এবং বিভিন্ন ভাতা নিয়ে মোট বেতন ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা।
*** বিশেষ আবেদন ; যদি আপনার আমাদের লেখা এই নোটটি ভালো লাগে এবং আপনি উচ্চ মাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান সফল অধ্যায়ের সাজেশন এবং সকল গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উওরের PDF Notes খুবই সামান্য দামে পেতে চান, তাহলে আজই +918388986727 নম্বরে কল করুন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ও কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা
যিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব বা শপথ গ্রহণ করেন,তাকে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে হয়। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা এবং কার্যাবলীকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়।
যেমন-
▪ প্রথমত, রাষ্ট্রপতির প্রধান পরামর্শদাতা :
১৯৭৬ সালের ৪২ তম এবং ৭৮ এর ৪৪ তম সংবিধান সংশোধনী অনুযায়ী- রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রী পরিষদের পরামর্শ মেনে চলতে বাধ্য। তাই প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির প্রধান পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করে থাকেন। লোকসভার অধিবেশন আহবান,অধিবেশন স্থগিত রাখা,লোকসভা ভেঙে দেওয়া,জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা, বিভিন্ন উচ্চপদ আধিকারিকদের নিয়োগ ছাড়াও অন্যান্য বিষয়ে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করেন।
▪ দ্বিতীয়ত- লোকসভার প্রধান ;
যেহেতু লোকসভা সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী দলের নেতাই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন,সেই কারণে বলা যায় তিনি হলেন লোকসভার প্রধান নেতা। লোকসভায় কোন দিন,কোন বিষয়ে কতক্ষণ আলোচনা হবে, সরকারের কোন বিল পাস হবে, লোকসভার স্পিকার কে হবে সেটাও ঠিক করেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও লোকসভায় কোনো সদস্য কোনো বাঁধার সম্মুখীন হলে তাকে সাহায্য করা,বিরোধীদের সঙ্গে সদ্ ভাব বজায় রাখা, অধিবেশনে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে স্পিকারকে পরামর্শ দেওয়াও প্রধানমন্ত্রীর কাজ।
*** বিশেষ আবেদন ; যদি আপনার আমাদের লেখা এই নোটটি ভালো লাগে এবং আপনি উচ্চ মাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান সফল অধ্যায়ের সাজেশন এবং সকল গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উওরের PDF Notes খুবই সামান্য দামে পেতে চান, তাহলে আজই +918388986727 নম্বরে কল করুন।
▪ তৃতীয়ত- মন্ত্রিসভার নেতা ;
প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভা গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করে থাকেন। সেই কারণে প্রধানমন্ত্রীকে বলা হয় মন্ত্রিসভার প্রধান বা নেতা। কারা কারা মন্ত্রিসভার নেতা হবেন, কোন মন্ত্রী ক্যাবিনেট মন্ত্রী হবেন,কারা রাষ্ট্রমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী হবেন, কে কোন দপ্তরে থাকবেন সেটা ঠিক করেন প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ মেনে মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়োগ এবং তাদের মধ্যে দপ্তর বন্টন করেন। আবার প্রধানমন্ত্রী মনে করলে তার অপছন্দের কোন মন্ত্রীকে পদত্যাগ করার কথা বলতে পারেন অথবা রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে পদচ্যুতও করাতে পারেন।
▪ আবার, মন্ত্রিসভার কার্য পরিচালনার জন্য যে সচিবালয় থাকে তা আবার প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণ থাকে।
▪ এছাড়াও- মন্ত্রিসভার একাধিক স্থায়ী এবং অস্থায়ী কমিটি নিয়োগের ব্যাপারেও আর ক্ষমতা রয়েছে ন কারণ অধিকাংশ কমিটির সভাপতি তিনি নিজেই হন।
▪ চতুর্থ- জনগণের নেতা ;
প্রধানমন্ত্রী হলেন সমগ্র জনগণের / জাতির নেতা। জনগণের নেতা হিসেবে তাকে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে হয়। জনগণের নেতা হিসেবে দেশের অভ্যন্তরে প্রধানমন্ত্রীকে জনগণের চাহিদা, প্রয়োজনীয়তা আশা-আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করে তা পূরণ করার জন্য বিভিন্ন নীতি, যোজনার মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কার্যসম্পাদন করতে হয়। একইভাবে, নিজের উপস্থিত বিবেক-বুদ্ধি এবং বিচক্ষণতার সাহায্য আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বিভিন্ন কার্য করতে হয়।
▪ পঞ্চম- দলের প্রধান ;
প্রধানমন্ত্রী হলেন ক্ষমতায় থাকা দলের প্রধান নেতা বা নেত্রী। লোকসভায় বিরোধী দলের সদস্যদের সামনে এবং বাইরে জনগণের সামনে তার দলের ভাবমূর্তি যাতে কোনো ভাবে নষ্ট না হয়, দলের ঐক্য এবং সংহতি যাতে বজায় থাকে, দলীয় মর্যাদা ধরে রাখার বিষয়েও খেয়াল রাখাও প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পদমর্যাদা
ভারতের শাসন ব্যবস্থা ব্রিটেনের শাসন ব্যবস্থার অনুকরণে তৈরি হয়েছে। ব্রিটেনের শাসন ব্যবস্থায় নাম সর্বস্ব শাসক হিসেবে রয়েছেন ব্রিটেনের রাজা বা রানী এবং প্রকৃত শাসক হিসেবে রয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী। ব্রিটেনের রাজা বা রানীর মতো ঠিক একইভাবে ভারতের রাষ্ট্রপতি হলেন নাম সর্বস্ব শাসক। ভারতীয় শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি প্রধান হলেও প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রপতি তার যাবতীয় শাসন ক্ষমতার বেশিরভাগটাই প্রয়োগ করে থাকেন প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে। তাই বলতে গেলে রাষ্ট্রপতির হয়ে প্রকৃতপক্ষে শাসন ক্ষমতা প্রয়োগ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তাই প্রধানমন্ত্রীই হলেন ভারতের প্রকৃত শাসক।
** আরও পড়ে দেখুন ; লোকসভার স্পিকারের উপর A1 নোট
** আরও জানো ; মূখ্যমন্ত্রীর যোগ্যতা, ক্ষমতা ও কার্যাবলী সম্পর্কে A1 নোট
**** একটা সুন্দর নোট দেখে নাও : রাষ্ট্রপতির যোগ্যতা, নির্বাচন, ক্ষমতা ও কার্যাবলী সম্পর্কে