ভারতীয় পার্লামেন্টের গঠন ও কার্যাবলী সম্পর্কে একটা সহজ ও সুন্দর নোট

Ajit Rajbanshi
0

 

composition-and-functions-of-indian-parliment-in-bengali

ভারতীয় পার্লামেন্টের গঠন ও কার্যাবলী

WBCHSE Class 12 Political Science Or WB HS Political Science-Chapter No 8 : উচ্চমাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান অষ্টম অধ্যায়- ভারতের আইন বিভাগে সবার প্রথমেই তোমাদের আমাদের ভারতের কেন্দ্রীয় আইনসভা তথা পার্লামেন্ট সম্পর্কে পড়তে হবে। পরীক্ষায় তোমাদের এই টপিক থেকে যেই প্রশ্নটা আসতে পারে তা হলো "ভারতীয় পার্লামেন্টের গঠন ও কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা" করো। তাই তোমাদের সুবিধার্থেই আজকে "Composition And Functions Of Indian Parliment" সম্পর্কে একটা নোট তোমাদের জন্য শেয়ার করা হলো।


ভারতীয় পার্লামেন্টের গঠন ||Composition Of The Indian Parliament 

ভারতীয় পার্লামেন্টে গঠিত হয় তিনটি অংশ নিয়ে। যথা- রাষ্ট্রপতি, রাজ্যসভা এবং লোকসভা। 

ভারতীয় পার্লামেন্টের গঠন সম্পর্কে বলা হয়েছে সংবিধানের Part V, Article 79 থেকে 122 এর মধ্যে। 

▪ ভারতীয় পার্লামেন্টে রাষ্ট্রপতি কোনো কক্ষে না বসলেও তাকে নিয়ে পার্লামেন্ট গঠিত হয়েছে। 

এর কারণ হলো- পার্লামেন্ট যেসব আইন তৈরি করে, সেইসব আইন, ততক্ষণ পযর্ন্ত আইনে পরিণত হবেনা যতক্ষণ না সেই বিলে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর থাকবে। তাই পার্লামেন্টের কোনো কক্ষে না বসলেও পার্লামেন্টে রাষ্ট্রপতির প্রয়োজন রয়েছে।।

▪ আবার, কোনো বিল নিয়ে পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের মধ্যে বিরোধ বাঁধলে পার্লামেন্টের উভয়কক্ষের যৌথ অধিবেশন ডাকার ক্ষমতাও রাষ্ট্রপতি হাতেই রয়েছে।

▪ ভারতের আইনসভা ব্রিটেনের আইনসভার অনুকরণে গঠন করা হয়েছে বলে ভারতীয় আইনসভার নামও পার্লামেন্ট। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট গঠিত হয় ব্রিটেনের রাজা বা রানি এবং দুটি কক্ষ হাউজ অফ লর্ডস এবং হাউস অফ কমন্স নিয়ে। 

▪ একইভাবে ভারতের পার্লামেন্টে গঠিত হয় তিনটি অঙ্গ নিয়ে যথা- ভারতের রাষ্ট্রপতি (President), আইনসভার উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা (Council Of States), এবং নিম্নকক্ষ লোকসভা (The House Of People) নিয়ে।


▪ আইনসভার উচ্চকক্ষ তথা রাজ্যসভার গঠন ( Composition Of Rajya Sabha / Council Of State ) : 

ভারতীয় সংবিধানের ৮০ নম্বর ধারায় রাজ্যসভার গঠন সম্পর্কে বলা হয়েছে। ভারতীয় সংবিধানে বলা হয়েছে রাজ্যসভা সর্বোচ্চ ২৫০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে। ২৫০ জনের মধ্যে ২৩৮ জন হবেন বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল থেকে নির্বাচিত এবং বাকি ১২ জন হবেন রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত সদস্য। ২০০১ সালের ৮৪ তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে ২০২৬ সাল পর্যন্ত এই সংখ্যা অপরিবর্তিত রাখার কথা বলা হয়েছে।

বর্তমানে রাজ্য সবার সদস্য সংখ্যা হচ্ছে ২৪৫ জন। ২৪৫ জন সদস্যদের মধ্যে ২৩৩ জন হলেন অঙ্গরাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে নির্বাচিত এবং রাজ্যসভায় বাকি ১২ জন রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন বিশিষ্ট ক্ষেত্র থেকে (যেমন- বিজ্ঞান, শিল্প, সাহিত্য) থেকে মনোনীত করেছেন।

রাজ্যসভার সদস্যরা ছয় বছরের জন্য নির্বাচিত হন। প্রতিবছর সদস্যদের এক তৃতীয়াংশ সদস্য অবসর গ্রহণ করে থাকেন। 

▪ ভারতের প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সমূহের নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে পার্লামেন্টের এই কক্ষ গঠন করা হয় বলে এর নাম দেওয়া হয়েছে রাজ্যসভা। 

রাজ্যসভা হচ্ছে পার্লামেন্টের স্থায়ী কক্ষ। যেটা কখনো ভেঙে ফেলা যায় না।


আইনসভার নিম্নকক্ষ তথা লোকসভার গঠন || Composition Of Lok Sabha 

ভারতীয় পার্লামেন্ট বা কেন্দ্রীয় আইনসভার নিম্নকক্ষের নাম হল লোকসভা। প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিকগণ নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে লোকসভায় প্রেরণ করেন। লোকসভার সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা হতে পারে ৫৫২ জন এবং লোকসভার বতর্মান সদস্য সংখ্যা ৫৪৫ জন। ৫৫২ জনের মধ্যে ৫৩০ জন নির্বাচিত হবেন বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের আইনসভা থেকে এবং ২০ জন নির্বাচিত হবেন ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সমূহ থেকে। বাকি দুজনকে রাষ্ট্রপতি অ্যাংলো ইন্ডিয়ান সম্প্রদায়কে মনোনীত করবেন।। তবে হ্যাঁ সম্প্রতি ২০১৯ সালের ১০৪তম সাংবিধানিক সংশোধনী আইনের মাধ্যমে লোকসভায় দুই অ্যাংলো ইন্ডিয়ানের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। লোকসভার সদস্যগন ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়ে থাকেন।।



বিশেষ ঘোষণা ; তোমরা যদি উচ্চমাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্পূর্ণ সিলেবাসের এরকম সুন্দর তথ্যভিত্তিক পিডিএফ নোট পেতে চাও, তাহলে আজই - +918388986727 নম্বরে যোগাযোগ করো

ভারতীয় পার্লামেন্টের বা কেন্দ্রীয় আইনসভার কার্যাবলী (Functions Of Parliament) ; 

ভারতের কেন্দ্রীয় আইনসভা পার্লামেন্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলীকে আমরা প্রধানত কয়েকটা ভাগে ভাগ করে আলোচনা করতে পারি। 

▪ প্রথমতঃ আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত ক্ষমতা ;

▪ দ্বিতীয়তঃ শাসন বিষয়ক ক্ষমতা ;

▪ তৃতীয়তঃ অর্থ সংক্রান্ত ক্ষমতা ;

▪ চতুর্থঃ সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত ক্ষমতা ;

▪ পঞ্চমঃ নির্বাচন সংক্রান্ত ক্ষমতা ;

▪ ষষ্ঠঃ জরুরি অবস্থা সংক্রান্ত ক্ষমতা ইত্যাদি

প্রথমতঃ আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত ক্ষমতা ; জনগণের কল্যাণের স্বার্থে বা জনগণের বিভিন্ন রকম চাহিদা পূরণে আইন প্রণয়ন এবং সংশোধন করাই হলো পার্লামেন্টের প্রথম এবং প্রধান কাজ। ভারতে আইন প্রণয়নের জন্য তিনটি তালিকা রয়েছে। যথা কেন্দ্র তালিকা, যুগ্ম তালিকা এবং রাজ্য তালিকা। পার্লামেন্ট কেন্দ্রীয় তালিকার অন্তর্ভুক্ত ১০০ টি বিষয়ে এককভাবে এবং যুগ্ম তালিকার অন্তর্ভুক্ত ৫২টি বিষয়ে অঙ্গরাজ্যের সঙ্গে যুগ্মভাবে আইন তৈরি করতে পারে।।

তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় এটাই যে- কিছু ক্ষেত্রে পার্লামেন্ট রাজ্য তালিকাভুক্ত বিষয়েও আইন প্রণয়ন করতে পারে। যেমন জরুরি অবস্থা চলাকালীন সময়ে পার্লামেন্ট প্রয়োজন বোধে রাজ্য তালিকাভুক্ত যেকোনো বিষয়ে আইন প্রণয়ন করতে পারে।।

▪  দ্বিতীয়তঃ শাসন সংক্রান্ত কার্যাবলী ও ক্ষমতা ; পার্লামেন্টের শাসন বিষয়ক ক্ষমতা বলতে আমরা দুই ধরনের ক্ষমতাকে বোঝাবো থাকি। প্রথমত শাসন বিভাগ গঠন সংক্রান্ত ক্ষমতা এবং দ্বিতীয়ত শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত ক্ষমতা। ভারতের সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় প্রতি পাঁচ অন্তর নির্বাচনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টে যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে, সেই দলের নেতাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করা হয় এবং সেই দলের কয়েকজন বিশিষ্ট নেতাদের নিয়েই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। 

▪ শাসন বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত ক্ষমতা ;

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা তাদের কার্যকরীর জন্য পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার কাছে দায়িত্বশীল থাকে। সংসদের বিরোধী দলের সদস্যরা মন্ত্রীদের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা, অনাস্থা প্রস্তাব, মূলতুবী প্রস্তাব, বিতর্ক প্রভৃতির মাধ্যমে মন্ত্রী পরিষদকে নিয়ন্ত্রণ করে। মন্ত্রিসভার সবসময়ই লোকসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন হয়।পার্লামেন্টে কোনো সরকারি বিরোধী প্রত্যাখ্যাত হয় তাহলে ধরে নেওয়া হয় যে মন্ত্রিসভা সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। এরূপ ক্ষেত্রে সমস্ত মন্ত্রী পরিষদকেই পদত্যাগ করতে হয়।

তৃতীয়তঃ অর্থ সংক্রান্ত ক্ষমতা ; ভারতীয় সংবিধানে কেন্দ্র সরকারের আয় ব্যয় নিয়ন্ত্রণের যাবতীয় ক্ষমতা পার্লামেন্টের হাতে দেওয়া হয়েছে। পার্লামেন্ট বিশেষ করে লোকসভার অনুমোদন ছাড়া সরকারের কর ধার্য,কর সংগ্রহ বা কোনো আয় ব্যয় সম্ভব হয় না। আবার পার্লামেন্টে যে বাজেট পেশ হয়, সেই বাজেটে বিভিন্ন খাতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দের দাবি করা হয়, সেই দাবির উপর বিভিন্ন রকম ছাটাই প্রস্তাব এনেও তা নিয়ন্ত্রণ করার রয়েছে পার্লামেন্টের। আবার সরকারি আয়-ব্যয় সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তা তদারকি করার জন্যেও লোকসভার দুটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটি রয়েছে যা হলো সরকারি গণিতিক কমিটি পাবলিক এবং আনুমানিক ব্যয় হিসাব কমিটি। 


** উচ্চমাধ্যমিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্পূর্ণ সিলেবাসের PDF নোট or HS Political Science PDF Notes খুবই স্বল্পমূল্যে নিতে চাইলে আজই যোগাযোগ করো আমাদের +918388986727 নম্বরে।

 


চতুর্থঃ সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত ক্ষমতা ; ভারতীয় সংবিধানে ৩৬৮ নম্বর ধারায় সংবিধান সংশোধন সম্পর্কে বলা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় পার্লামেন্ট সাধারণভাবে এবং কতকগুলি বিশেষ ক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় পার্লামেন্ট সংবিধান সংশোধন করতে পারে। কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতার বন্টন, রাষ্ট্রপতির নির্বাচন সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট সংক্রান্ত বিষয়ের মত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কেন্দ্রীয় পার্লামেন্ট অঙ্গরাজ্য গুলির অর্ধেক আইনসভার অনুমোদন সাপেক্ষে সংবিধান সংশোধন করতে পারে।

পঞ্চমঃ নির্বাচন ও পদচ্যুত সংক্রান্ত ক্ষমতা ; কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টের আবার নির্বাচন এবং পদচ্যুত করার ক্ষমতা রয়েছে। ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে নির্বাচনী সংস্থার (Electoral College)'র অংশ হিসেবে পার্লামেন্টের শুধুমাত্র নির্বাচিত সদস্যরা ভোট দিয়ে থাকেন। আবার উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে পার্লামেন্টের উভয়পক্ষের সকল সদস্যরাই অংশগ্রহণ করেন। 

আবার একইভাবে সংবিধান ভঙ্গের অভিযোগে রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতিকে পার্লামেন্ট মহাবিচার বা ইমপিচমেন্ট পদ্ধতিতে পদচ্যুত করতে পারে। এছাড়াও সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্টের বিচারপতিদের অযোগ্যতা এবং অসদাচরণের ভিত্তিতে পার্লামেন্ট রাষ্ট্রপতির কাছে তাদের অপসারণের জন্য সুপারিশ করতে পারে। এছাড়াও মুখ্য নির্বাচন কমিশনার,,মহা হিসাব নিয়ামক প্রমুখকে পদচ্যুত করার জন্যেও পার্লামেন্ট প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারে।।

ষষ্ঠঃ জরুরি অবস্থা সংক্রান্ত ক্ষমতা ; ভারতের রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৩৫২ নং ধারা অনুযায়ী জাতীয়; ৩৫৬ নং ধারা অনুযায়ী রাজ্যগুলিতে সাংবিধানিক অচল অবস্থা সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা এবং ৩৬০ নং ধারা অনুযায়ী আর্থিক জরুরি অবস্থা জয় করতে পারেন এক্ষেত্রে প্রতিটি জরুরি অবস্থা জারির ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রপতির ঘোষণাকে লোকসভা এবং রাজ্যসভা কর্তৃক অনুমোদিত হতে হয়। যদি পার্লামেন্টে তা অনুমোদিত না হয়,;তাহলে সেই ঘোষণা বাতিল হয়ে যায়।।

তবে ; এই নির্দিষ্ট কয়েকটা কার্যকরী ছাড়াও কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টকে আরো নানা ধরনের কাজ করতে হয়। যেমন রাজ্য গঠন এবং রাজ্যের পূর্নগঠন সংক্রান্ত কার্যাবলী, বিচার সংক্রান্ত কার্যাবলী ইত্যাদি।।


 

এটা পড়ো👉 : ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উপর সবচেয়ে সুন্দর নোট

** আরও পড়ে দেখুন ; লোকসভার স্পিকারের উপর A1 নোট

** আরও জানো ; মূখ্যমন্ত্রীর যোগ্যতা, ক্ষমতা ও কার্যাবলী সম্পর্কে A1 নোট

**** একটা সুন্দর নোট দেখে নাও : রাষ্ট্রপতির যোগ্যতা, নির্বাচন, ক্ষমতা ও কার্যাবলী সম্পর্কে  


▪ আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন করুন👉 Telegram Channel 
▪ সরাসরি ইমেইল করতে 👉 rajajit6666@gmail.com
▪ ফেসবুক পেজ থেকে ম্যাসেজ করুন👉 Facebook Page 

▪ ফলো করুন আমাদের👉 WhatsApp Channel

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)